বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে উপবৃত্তি বিতরণে সরকারি খরচ এক তৃতীয়াংশে নেমে আসবে। এর আগে শিওরক্যাশ এই সেবা দিয়ে আসছিল।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, একে তো ‘নগদ’ আমাদের ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান। তার ওপরে আমাদের অনেক টাকা খরচ বাঁচবে। সুতরাং ‘নগদ’-কে বেছে নেওয়াটা আমি মনে করি যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে শিওরক্যাশের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করতে গিয়ে আমরা অনেক ঝামেলায় পড়েছি। কিন্তু আমরা দেখছি ‘নগদ’ অনেক ভালো করছে। আজ-কালের মধ্যেই ‘নগদ’-এর সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করা হবে।’
জানা গেছে, শিওরক্যাশ ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা ক্যাশ আউটের জন্য সরকারের কাছ থেকে বৃত্তির মোট টাকার ওপরে ১.৮৫ শতাংশ, অর্থাৎ এক হাজারে সাড়ে ১৮ টাকা পেতো। তার সঙ্গে ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্য হাজারে আরো ৩ টাকা চার্জ করত। এক্ষেত্রে পুরো কাজটি ‘নগদ’ করে দেবে হাজারে সাড়ে ৭ টাকায়। তবে ক্যাশ-আউটের জন্য বাড়তি যা লাগে সেটা ‘নগদ’ যোগ করেই উপবৃত্তিভোগী শিক্ষার্থীকে পাঠাবে।
নতুন এই চুক্তির আওতায় গত এপ্রিল-মে এবং জুন এই তিন মাসের উপবৃত্তিও ‘নগদ’ বিতরণ করবে। দুই-একদিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেটা পেয়ে গেলে চলতি মাস থেকেই তারা আগের তিন মাসের উপবৃত্তি পেয়ে যাবে।
প্রতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী এই প্রক্রিয়ায় উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। তাতে সব মিলে সরকারের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দু’টি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবে ওপেন টেন্ডার ম্যাথড বা ওটিএম পদ্ধতিতে যাওয়া বা ‘নগদ’-কে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তখন সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী ‘নগদ’-কে কাজটি দিতে নির্দেশনা দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, শিওরক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ করতে গিয়ে গত তিন বছরে তারা অসংখ্যা অভিযোগ পেয়েছে। তার মধ্যে ক্যাশ-আউটের জন্য পর্যাপ্ত এজেন্ট পয়েন্ট না থাকা বা এজেন্টরাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা রেখে দেওয়াসহ নানান অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ের একেকজন শিক্ষার্থী ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তি পেয়ে থাকে। এর ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার হার অনেক কমেছে।
Leave a Reply